হেলাল উদ্দিন, টেকনাফ :
টেকনাফের হ্নীলায় ছুরিকাঘাতে রক্তাক্ত এক ব্যক্তি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেছে। এই মৃত্যু নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন বক্তব্য পাওয়া গেলেও প্রকৃত অপরাধীরা জনপ্রতিনিধি ও প্রভাবশালী নেতাদের নিয়ে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চালানোর অভিযোগ উঠেছে।
জানা যায়, ২১ অক্টোবর ভোর পৌনে ৬ টারদিকে চমেক হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের পূর্ব লেদার মৃত কালা চাঁনের পুত্র আবু ছিদ্দিক (৩১)মৃত্যুবরণ করেন বলে খবর এলে তার মা,সন্তান সম্ভাবা স্ত্রী,৮ভাই,২বোনসহ আত্মীয়-স্বজনের কান্নায় বাড়িতে শোরগোল পড়ে।
তাকে পোস্টমর্টেম শেষে বাড়িতে এনে দাফনের প্রস্তুতি চলছে। গত ১৯ অক্টোবর রাত ১০টারদিকে লেদা টাওয়ার সংলগ্ন মৌলভী পাড়ায় ইউছুপ আলীর বাড়ির সামনে আবু ছিদ্দিককে চুরিকাঘাত করার ঘটনা ঘটে। আগামী ২২অক্টোবর সকাল ৯টায় তাকে স্থানীয় গোরস্থানে দাফন করা হবে বলে পারিবারিক সুত্র জানিয়েছে।
উল্লেখ্য,গত ৪অক্টোবর সন্ধ্যা রাত ৭টারদিকে হ্নীলা বিওপির নায়েক সুবেদার নুরুল ইসলাম গোপন সংবাদের ভিত্তিতে নাটমোরাপাড়া হতে ৭লক্ষ ৮০হাজার টাকার ১১টি মহিষ জব্দ করে। জব্দকৃত মহিষ হ্নীলা কাস্টমসে জমা দেওয়া হয়। কাস্টম্স কর্তৃপক্ষ তা নিলামে বিক্রি করে দিলেই পূর্ব লেদার মৃত কালা চাঁনের ৪র্থপুত্র আবু ছিদ্দিক (৩১)মহিষ বা ক্ষতিপূরণ চাইতে মৌলভী পাড়ার বার্মাইয়া মোহাম্মদ হোছন প্রকাশ (বব-অ) পুত্র ধলাইয়া,কালাইয়ার বাড়িতে যায়। তা নিয়ে দুইপক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে রোহিঙ্গা সহোদর ক্ষুদ্ধ হয়ে আবু ছিদ্দিককে মারধর ও ছুরিকাঘাত করে। শোর-চিৎকার শুনে লোকজন উপস্থিত হয়ে রক্তাক্ত আবু ছিদ্দিককে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য টেকনাফ উপজেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে তার অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় রেফার হয়ে চমেক হাসপাতালে নিয়ে আইসিইউতে রাখা হয়। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু ঘটে। এই খবর ছড়িয়ে পড়ার পর হামলাকারী চক্রের সদস্যরা গা ঢাকা দিয়ে মোটাংকের মিশন নিয়ে বিভিন্ন প্রভাবশালী জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক নেতাদের মাধ্যমে রেহায় পেতে লবিং চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানা গেছে।
নিহতের মামা সোলতান আহমদ বলেন,মহিষ সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে আবু ছিদ্দিককে ছুরিকাঘাত করা হয়। এই ব্যাপারে স্থানীয় মেম্বার নুরুল হুদা বলেন,আমি নিহতের পরিবার থেকে কোন ধরনের বক্তব্য পাইনি তবে স্থানীয় লোকজন থেকে মহিষ সংক্রান্ত বিষয়ে এই ঘটনা ঘটেছে বলে জানান। স্থানীয় মহিলা মেম্বার মর্জিনা আক্তার বলেন,মহিষ সংক্রান্ত বিষয়ে এই ন্যাক্কারজনক ঘটনা বলে দাবী করেন। তবে এই চক্রের সাথে কেউ জড়িত কিনা সে বিষয়ে কিছু বলতে পারেনি।
টেকনাফ মডেল থানার ওসি (তদন্ত) শেখ আশরাফুজ্জামান বলেন, এখনো পর্যন্ত এই ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। অভিযোগ দায়ের করা হলে তদন্ত স্বাপেক্ষ পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
উক্ত অপরাধীরা দীর্ঘদিন ধরে নানা অপরাধ করার পাশাপাশি বিভিন্ন সংস্থার সোর্স পরিচয় দিয়ে নানা অনৈতিক সুবিধা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে এই জাতীয় ঘটনার আশ্রয় নেয় বলে জানা গেছে।